চুল পড়া নিয়ন্তণের ঘরোয়া উপায়
অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণে প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্যে যত্ন নিতে পারেন চুলের।নিয়মিত এই প্রাকিতিক উপাদান গুলো ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হয়। চুল নরম ও সফ্ট হয়। এগুলোর কাজ ধীরে ধীরে হয়। একটু সময় নিয়ে করতে হবে তাড়াহুড়া করলে হবে না।তাহলে ফলটা ভালো হবে। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে চুল পড়ে যায়।কোন সমস্যা না থাকলে আমরা ঘরোয়া উপায়ে এই উপাদান গুলো ব্যবহার করতে পাড়ি।
ভূমিকাঃ
চুল পড়া ঠেকাতে আমরা কত কিছুই না ব্যবহার করে চলেছি। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ টা পর্যন্ত চুল ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু এর থেকে বেশি পরিমাণে চুল উঠলে চিন্তা করতে হবে। মাথায় হাত দিলেই মুঠোয় মুঠোয় চুল উঠলে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। প্রায় মানুষেরই চুল উঠার সমস্যা ভুগছেন। এই সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের অনেক যত্নবান হতে হবে। এজন্য আমাদের ঘরোয়া উপায়ে চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সপ্তাহে দুই দিন অথবা একদিন চুলের যত্ন নেওয়া উচিত।
জেনে নিন চুল পড়ার নিয়ন্ত্রণের কিছু ঘরোয়া উপায়ঃ
মেথির ব্যবহারঃ
মেথি ব্যবহার করলে চুলের গোড়া মজবুত হয়। চুল পড়া বন্ধ করে। চুলের রুক্ষতা দূর করে। চুলকে মসৃন করে। মেথি ব্যবহার করলে চুল সিল্কি দেখায়। চুল পাকা রোধ করে। মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন বেটে চুলে লাগান ।৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু দিয়ে।
নারিকেল তেল এর ব্যবহার
নারিকেলের তেল খুবই উপকার চুলের জন্য। শুষ্ক রুক্ষ চুলের জন্য তেল খুবই উপকার। সপ্তাহে দুইদিন বা একদিন তেলটি গরম করে ক্যাল্পে হালকা হাতে ঘুষুন।তারপর চুলটি ভালোভাবে আঁচড়ে নিন।চুলের জট তো ছাড়বে সঙ্গে সঙ্গে ময়লা পরিষ্কার হবে। এক দুই ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে ফেলুন।
ডিমর ব্যবহার
চুলের যত্নে ডিমের তুলনা হয় না।ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করতে হয়। রুক্ষ চুলে আধা কাপ পরিমাণ ডিম ভালোভাবে ফেটিয়ে তা মাথায় লাগাতে হবে। এর সঙ্গে দুই চামচ তেল ব্যবহার করা যাবে। ডিমে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড চুলে পুষ্টি যোগায়। চুল ভেঙ্গে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
৪০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
আমলকির ব্যবহার
আমলকি ফলের তুলনা হয় না। কারণ আমলকিতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি। যা চুল, ত্বক, দাঁত ইত্যাদি তৈরিতে ভূমিকা রাখে। আপনি যদি প্রতিদিন দুইটি করে আমলকি খান তাহলে অনেক উপকার হবে। আমলকি চুলের গোড়া মজবুত করে। চুলকে সিল্কি করে। চুল পড়া রোধ কর।
কলার ব্যবহার
পাকা কলার সাথে তেল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগিয়ে ৪০ মিনিট রাখুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলন।
জবা ফুলের ব্যবহার
জবা ফুল চুলের জন্য খুবই উপকার। জবা ফুল ও জবা ফুলের পাতা ছেচে নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে তুলে লাগাতে হবে। এতে ভিটামিন সি রয়েছে, যা কোলোজেন তৈরিতে সাহায্য করে। চুল সিল্কি দেখা এবং সফট করে। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলন।
পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রস চুল পড়া থেকে রক্ষা করে। যে জায়গায় চুল উঠে গিয়েছে সে জায়গায় পেঁয়াজের রস দিন। কিছুদিনের মধ্যেই দেখা যাবে সেখানে চুল গজাচ্ছে। সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করন ।চুলের গোড়ায় লাগিয়ে 15 মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর ধুয়ে ফেলুন।
টক দই এর ব্যবহার
- টক দই দিলে চুল খুব সফট ও নরম হয়। চুলের গোড়া শক্ত হয়। টক দই আর ডিম এক সঙ্গে ফেটিয়ে দিন।তারপর চুলে দিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন এরপর ধুয়ে ফেলুন।
- সরিষার তেল ও টক দই ব্যবহার করলে মাথার খুশকি চিরতরে দূর হয়ে যাবে।১ চামচ সরিষার তেল ও ২ চামচ টক দই একত্রে মিশিয়ে মাথায় দিতে হবে। এরপর ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
- চুলের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরিয়ে আনার জন্য দই ,লেবু, মধুর প্যাক আদর্শ।এটি ব্যবহার করলে ভিটামিন বি ও প্রোটিন যোগান দেয়। সপ্তাহে একবার শ্যাম্পু করার আগে লাগিয়ে রাখতে হবে। শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে নিন।
নিম পাতার নির্যাসঃ
নিম পাতার রস চুলের জন্য খুবই উপকারী। এটি ব্যবহার করলে মাথার ইনফেকশন, খুশকি অথবা অন্যান্য সমস্যা দূর হয়ে যাবে। ফলে চুলের গোড়া শক্ত হবে। চুল পড়ার হার কমবে। এক লিটার পানিতে ১০ থেকে ১৫ টি নিমের পাতা ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে।তারপর মিশ্রনটি ঠান্ডা করে বোতলে ভরে রাখতে হবে। সপ্তাহে অত্যন্ত একবার শ্যাম্পু করার পর এই নিমের মিশ্রণটি মাথায় দিতে হবে। তাহলে আপনার চুল খুব ভালো হবে।
আমলকির হেয়ার প্যাকঃ
আমরা যদি প্রতিদিন আমলকি খাওয়ার অভ্যাস করি তাহলে বিভিন্ন রকম সমস্যার সমাধান হবে। চুল ও ত্বকের যত্ন বেশ সাহায্য করবে। আমলকি খাওয়ার পাশাপাশি আপনি আমলকির হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে পারবেন।এক চামচ আমলকির গুড়া এবং দুই চামচ নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এই মিশ্রনটির মাথায় ভালোভাবে লাগিয়ে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট রাখার পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
লেখকের মন্তব্যঃ
আমরা যদি ঘরোয়া উপায় এগুলো ব্যবহার করে থাকি তাহলে আমাদের অবশ্যই উপকার হবে। নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে চুলের গোড়া মজবুত হবে চুল ওঠাও বন্ধ হবে। এগুলো ব্যবহার করার ফলে কোন ক্ষতি হবে না, বরং উপকারই হবে।আমাদের অবশ্যই উচিত এগুলো নিয়মিত ব্যবহার করা। আমার আর্টিকেলটি পরে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমার পেজটি ভিজিট করতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url