গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা
শীতের সবজির মধ্যে গাজর অন্যতম। গাজর পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি। গাজরের মধ্যে এমন কিছু উপাদান আছে যা আমাদের সুন্দর রাখতে এবং আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা গাজর সালাদ, জুস বা বিভিন্ন রকম সবজির মধ্যে দিয়ে খাওয়া হয়। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য গাজর খুবই উপকারী যেমন- চুল, ত্বক, চোখ ইত্যাদি।
গাজরের পুষ্টি উপাদানঃ
গাজরের মধ্যে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান রয়েছে। গাজর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। গাজোরে অনেক পুষ্টিকর গুণাবলী রয়েছে। এর মধ্যে ভিটামিন- এ, ভিটামিন- সি, ভিটামিন- কে,এবং ভিটামিন -বি, প্যান্টো থেনিক এসিড, ফোলেট, পটাশিয়াম,আয়রন, প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং বিটা ক্যারোট পাওয়া যায়।
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকার কারণে পুষ্টিবিদরা নিয়মিত গাজর খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।আমাদের দেশের জনগণ এইসব পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানেনা বলে গাজরের দাম কিছুটা কম।
গাজরের বৈজ্ঞানিক নামঃ
ডাকাস ক্যারোটা (Daucus Carota)
গাজরের নানাবিধি ব্যবহারঃ
গাজর এমন একটা সবজি যেটা কাঁচা ও খাওয়া যায় এবং রান্না করেও খাওয়া যায় ।গাজরের পাতা গবাদি পশুর বেশ প্রিয় খাদ্য।গাজর সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় সালাদে। গাজর জুস হিসেবেও খাওয়া যায়। চাইনিজ ভেজিটেবিলেও গাজর ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।
গাজরের নানা পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানলাম। এটি আমাদের শরীরে কি কি উপকার করে? সেটি জানা অত্যন্ত জরুরী। গাজরের নানাবিধ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিয়
গাজরের উপকারিতাঃ
গাজরের মধ্যে বিভিন্ন রকমের উপকারিতা রয়েছে। নিচে উপকারিতা গুলো দেওয়া হল
চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ
চোখ আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। চোখ ছাড়া পৃথিবীর কোন কিছুই দেখা সম্ভব নয়। তাই চোখের যত্ন নেওয়া আমাদের খুবই জরুরী। এজন্য আমাদের প্রতিদিন একটি করে গাজর খেতে হবে। ছোট বড় সকলের। আমরা জানি, ভিটামিন -এ আমাদের চোখের জন্য খুব উপকারী। আর গাজরে রয়েছে বিটা ক্যারোট।
এটি নিজে নিজেই ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। আমাদের দেশে বেশির ভাগ শিশু ভিটামিন এ এর অভাবে অন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এজন্য শিশুকে নিয়মিত গাজর খাওয়ান।
অতিরিক্ত ওজন কমায়ঃ
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ মোটা হয়ে থাকে। যা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর।অতিরিক্ত মোটা হলে মানুষকে সুন্দর দেখায় না। মানুষ মেদ বা চর্বি কমানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। হাজার হাজার টাকা খরচ করে এই মেদ কমানোর জন্য। কিন্তু আমরা যদি গাজর খায় তাহলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমে। গাজরে ক্যালরির পরিমাণ কম এবং ফ্যাট থাকে না।
একটি গাজর খেলে পেট ভরে যায় কিন্তু শরীরের ওজন বাড়ে না।এজন্য নিয়মিত গাজর খেতে হবে।
লিভার সুস্থ রাখেঃ
লিভার সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত গাজর খাওয়া দরকার। কারণ গাজর এর বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে, যা আমাদের লিভারে গিয়ে বিভিন্ন টক্সিন বা ক্ষতিকর উপাদান পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। গাজর খাওয়ার ফলে লিভারে চর্বি জমতে দেয় না। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও রক্ষা করে।
দাঁতও হাড় সুস্থ রাখেঃ
দাঁত ও হাড় কে সুস্থ রাখার জন্য গাজর খেতে হবে। হাড়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সুস্থ ও সুন্দর দাঁত চান, তবে নিয়মিত গাজর খান। দাঁতকে মজবুর রাখতে সহায়তা করে।
ত্বক এবং চুল মজবুত রাখেঃ
গাজর খেলে ত্বক এবং চুল ভালো থাকে। আমাদের ত্বক শুকিয়ে যাওয়া রোধ করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, ত্বককে রোদে পোড়া দাগ হতে রক্ষা করে।চুলকে মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়া গাজর যেকোনো ব্যথা বেদনা ও শরীরের জ্বালাপোড়া কমায়, শরীরের কোন জায়গায় কেটে গেলে গাজরের রস দিলে সেটি ভালো হয়ে যায়। শিশুর বুদ্ধি বিকাশে সহায়তা করে, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
গাজরের অপকারিতাঃ
- গাজর খেলে ত্বক উজ্জ্বল হয়। তবে অতিরিক্ত গাজর খাওয়া যাবে না তাহলে রঙ এর পরিবর্তন হতে পারে।
- অতিরিক্ত গাজর খেলে শিশুর দাঁতের সমস্যা হতে পারে।
- গরমের সময় মানুষ বেশি সালাদ খায়। কিন্তু বেশি সালাদ খাওয়া যাবে না।
- যেসব শিশুরা মায়ের দুধ পান করে সেই সব মা দের বেশি গাজর খাওয়া যাবে না। বেশি গাজর খাওয়ার ফলে দুধের স্বাদ পরিবর্তন হয়। তখন বাচ্চারা দুধ খেতে চায় না।
- গাজর থেকে এলার্জির সমস্যা হতে পারে।
- আসলে কোন কিছুই বেশি খাওয়া ভালো নয়। সবকিছুই পরিমাণ মতো খেতে হবে। এজন্য আমাদের একটি করে গাজর খাওয়া উচত। তাহলে কোন সমস্যা হবে না।
লেখকের মন্তব্যঃ
প্রিয় পাঠক, এই ছিল– গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আজকের পোস্ট। পোষ্টটি ভালো লাগলে পরিচিত বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। আপনার কোন প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট করুন। এই ধরনের পোস্ট পড়তে চাইলে নিয়মিত চোখ রাখুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url