কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কলা অত্যন্ত সুস্বাদু ফল। কলা খেতে পছন্দ করে ছোট বড় সকলেই। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশে কলা পাওয়া যায়। কলা অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল ।কলাতে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান থাকে। সারা বছরি কলা পাওয়া যা।সকালে কোন কিছু খাওয়ার পর কলা খাওয়া উচিত। কারণ খালি পেটে কলা খাওয়া যাবেন।।খালি পেটে কলা খেলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে ।
কলাতে রয়েছে ভিটামিন পটাশিয়াম ক্যালরি ফাইবার ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি নানা পুষ্টিগুণ। প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়া উচিত। কলা একটি মিষ্টি ফল। ওটস এর সাথেও কলা খেতে পারে, সালাদের সাথেও কলা খেতে পারেন, দুধ আর মুড়ি দিয়ে কলা খেতে পারেন ইত্যাদি ।
কলার উপকারিতা নিচে দেওয়া হলঃ
কলা হজমে সহায়তা করেঃ
কলা খেলে হজম খুব ভালো হয়। কিন্তু বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবেনা। অল্প পরিমাণে খেতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সেটি ভালো হয়ে যাবে। এতে রয়েছে ফাইবার যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ভাইবার আমাদের শরীরে ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে কলা খাওয়া উচিতঃ
আমাদের ওজন কমানোর জন্য কলা খাওয়া উচিত। কলা খেলে অল্পতে পেট ভরে যায়। ক্ষুধা দূর হয়। এতে করে ওজনও বাড়ে না।একটি কলাতে ১০০ গ্রাম ক্যালরি থাকে। কলায় থাকা ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
কিডনি ভালো রাখতে কলা খাওয়ার উপকারিতাঃ
কিডনি ভালো রাখার জন্য নিয়মিত কলা খাওয়া উচিত। পটাশিয়াম কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি করে কলা খেলে আপনার কিডনির রোগ ৫০% কমে যেতে পারে।
হার্ট- এর স্বাস্থ্যের জন্য কলা খাওয়ার উপকারিতাঃ
পটাশিয়াম হৃদরোগের ঝুঁকি ২৭% কমিয়ে দিতে পারে। কলার মধ্যে আরও একটি উপাদান আছে সেটি হচ্ছে ম্যাগনেসিয়াম যা ৮% রয়েছে ।ম্যাগনেসিয়াম এর ঘাটতি হলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের ঝুঁকি এবং রক্তে চর্বির মাত্রা বাড়াতে পারে।
শরীরের পেশি তৈরি করে ও পেশিতে টান ধরা কমায়ঃ
একটানা অনেকক্ষণ কাজ করলে পেসিতে টান ধরেবা এক্সারসাইজ করলেও পেশীতে টান ধরে।এনার্জি পেতে চাইলে কলা খেতে হবে।আমাদের খাবার তালিকায়একটি করে কলা খাওয়া উচিত ।তাহলে এগুলো সমস্যা হবে না।
চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করেঃ
চোখ ভালো রাখার জন্য কলা খাওয়া উচিত ।কলাতে ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, লুটেইন এবং এন্টি অক্সাইড সমৃদ্ধ যা দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে । চোখ ভালো রাখার জন্য কলা খেতে হবে।
হাড় শক্ত করতে কলা খাওয়া উচিতঃ
কলা খেলে হাড় শক্ত হয়। কলাতে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কম থাকার এটি আমাদের হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুলের যত্নেঃ
কলা পেস্ট করে মুখে লাগালে ত্বক ভালো থাকে। মুখ পরিষ্কার হয়। চুলে ও পেস্ট করে লাগালে চুল সিল্কি ও সাইনি হয়। চুল লম্বা হয় দেখতে ভালো লাগে।
রক্ত স্বল্পতা দূরকরেঃ
কলা খেলে রক্ত স্বল্পতা দূর হয়।কলাতে প্রচুর প্ররিমানে আয়রন রয়েছে।
কলা খাওয়ার অপকারিতাঃ
কলা খেলে যেমন উপকার আছে তেমনি অপকারিতা আছে। যাদের কিডনির সমস্যা আছে তাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কলা খেতে হবে। বেশি কলা খাওয়া যাবেনা। তাদের কলা কম খেতে হবে। এলার্জির সমস্যা থাকলে তাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কলা খেতে হবে। যেমন এলার্জি থাকলে চুলকায়, জায়গায় জায়গায় ফোলা ভাব দেখা দেয়। শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা থাকলে অল্প পরিমানে কলা খেতে হবে। বেশি খেলে শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা দেখা দেয়।
কলা খাওয়ার সঠিক সময়ঃ
কলা খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে সকাল বেলা। কিংবা বিকালেও খেতে পারেন। রাতের বেলা খাওয়া উচিত নয়। রাতের বেলা খেলে ঠান্ডা লাগতে পারে। সকালে খেলে হজম হয় ভালো। রাত্রে খেলে হজম হতে দেরি হয়।
কলা তে কি কি ভিটামিন রয়েছে?
কলাতে বিভিন্ন রকমের ভিটামিন রয়েছে। যেমন ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-৬ এছাড়া ওরয়েছে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ,কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি।
সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতাঃ
প্রতিদিন সকালে নিয়মিত কলা খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি হয়। কলা খালি পেটে খাওয়া ঠিক নয় কোন কিছু খেয়ে কলা খেতে হয়। শরীরের ওজন কমাতে কলা সাহায্য করে। আমরা মনে করি কলা খেলে ওজন বৃদ্ধি হয়, এটা ঠিক নয়। কলাতে সব ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে ওজন বাড়ানোর পুষ্টিগুণ রয়েছে।
ওজন কমানোর পুষ্টিগুণ রয়েছে। কলা রক্তচাপ ঠিক রাখতে সহায়তা করে ,পানির চাহিদা পূরণ করে। কলাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের মধ্যে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতাঃ
রাতে কলা খাওয়া অনেক উপকার। কারণ রাতে কলা খেলে ঘুম ভালো হয়। যাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের রাতে কলা না খাওয়াই ভালো। রাতে কলা খেলে ঠান্ডা লাগতে পারে। কলাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে। কলা খেলে হজম হতে সময় লাগে। এজন্য সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কলা খেতে হবে। তাহলে কোন সমস্যা হবে না।
দুধ কলা খাওয়ার উপকারিতাঃ
দুধ ও কলা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। ডাক্তারদের মতে দুধ আর কলা একসঙ্গে খাওয়া ঠিক নয়। কারণ দুধ আর কলা একসঙ্গে খেলে হজম হতে অনেক সময় লাগে। দুধেও প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে এবং কলাতেও প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে তাই হজম হতে সময় লাগে। যাদের ঠান্ডা সমস্যা তাদের দুধ আর কলা একসঙ্গে খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।
এতে করে ঠান্ডার সমস্যা আরো বেশি দেখা দিতে পারে। এজন্য আধা ঘন্টা আগে দুধ খাবেন অথবা আধা ঘন্টা পরে কলা খাবেন।তাহলে কোন সমস্যা হবে না।
লেখকের মন্তব্যঃ
প্রিয় পাঠক এ আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কলা রাতে ও সকালে খাওয়ার উপকারিতা। এক থেকে দুইটি কলা খাওয়া ভালো।বেশি খাওয়া ভালো না।একটি বা দুইটি কলা খাওয়া শরীরের জন্য উপকার। আর্টিকেলটা যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে দয়া করে অন্যদের কাছে শেয়ার করে দিন।আর নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url