গোবর থেকে জৈব সার তৈরির নিয়ম


ভালো খাদ্য পেতে মাটিতে জৈব সার দিয়ে ফসল ফলানোর কোন বিকল্প নেই। মাটির গঠন ও গুনাগুন ঠিক রাখতে হলে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। তাই জৈব সার তৈরি ও সংরক্ষণের ব্যাপারে কৃষকদের যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। গোবর দিয়ে জৈব সার তৈরি করার জন্য কোন টাকা পয়সা খরচ করতে হয় না। বিনা খরচে জৈব সার পাওয়া যায়।

গোবর এর জৈব সার
 নিজস্ব শ্রম ও সবজি কাটার উচ্ছিষ্ট, খর কুটা, লতাপাতা,কচুরিপানা, ছাই ও হাঁস মুরগির বিষ্ঠা।গরুর গোবর, বাড়িঘর ঝার দেওয়া আবর্জনা পচিয়ে জৈব সার তৈরি করা যায়। এই জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির উৎপাদন বেড়ে যায় এবং রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীল অনেকটা কম হয়।প্রতিদিন যতটুকু গোবর পাওয়া যাবে তা যত্ন করে রাখতে হবে।

 কারণ কাঁচা গোবর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ঠিক নয়। আবার সাধারণ গোবর জমা করে রাখলে কবরের গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায়।

যেভাবে গোবর সার সংরক্ষণ করবেনঃ

গরুর মলমূত্র একত্রে মিশিয়ে ও পঁচিয়ে যে সার তৈরি করা হয় তাই গোবর সার। এই সার প্রত্যেকটি কৃষকের কাছে অত্যন্ত পরিচিত। জৈব সার ব্যবহার করলে ফসল খুব ভালো হয়এবং মাটির উর্বরতা বাড়ে। উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে এই মূল্যবান সারের বিরাট অংশ বিনষ্ট হয়ে থাকে।

 এই সার তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। গোবর এবং মলমূত্র যত্ন করে একত্রে রাখতে হবে। অনেক গর্ত করে গোবর সংরক্ষণ করতে হবে এবং উপরে আচ্ছাদন না থাকায় রোদ ও বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে যাবে।

 উপরে ছাউনি দিতে হবে তাহলে এই গোবরগুলো নষ্ট হবে না। এভাবে সার তৈরি করলে মাটি বা ফসলের জন্য কোন কাজে আসে না। গ্রাম অঞ্চলের মানুষগণ গোবরকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।

উন্নত পদ্ধতিতে যেভাবে গোবর সার তৈরি করবেনঃ

গোয়াল ঘরের কাছাকাছি সামান্য উঁচু ধার নির্বাচন করে নিতে হবে। এটি ১.৫ মিটার চওড়া,৩ মিটার লম্বা,১ মিটার গভীর গর্ত তৈরি করুন। গোবরের পরিমাণ অনুযায়ী এই গর্ত করতে হবে। গর্তের তলা ভালোভাবে পিটিয়ে সেখানে খড়কুটো , কাকর, বালি বিছিয়ে নিন যাতে পানি সহজে শুষে নিতে পারে ।অথবা চারপাশ গোবর দিয়ে একটু লেপে নিতে পারেন ।

গর্তকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিয়ে একভাগ এক ভাগ করে গোবর দিতে হবে।গর্তে গোবর ফেলার ফাঁকে ফাঁকে পুকুরের তলার মাটি দিতে হবে। এতে স্তর আঁটসাট হয় এবং সার গ্যাস হয়ে উঠে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। প্রায় দেড় মাস পর সারের গাদা ওলট পালট করে দিতে হবে।গাধা শুকিয়ে যায় তাহলে গোমূত্র দিয়ে ভিজিয়ে দিন, গোমূত্র একটি উৎকৃষ্ট সার।

 গোবরের সাথে টি এস পি সার ব্যবহার করলে জৈব সারের মান ভালো হয়। গোবরের গাধার প্রতি টনের জন্য ১৫ থেকে ২০ কেজি টি এস পি সার ব্যবহার করতে হবে। করা রোদে গোবর যেন শুকিয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, আবার বৃষ্টির পানিতে যেন ধুয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেজন্য এর উপর চালা তৈরি করতে হবে।

এমনিভাবে সংরক্ষণের ২মাসের মধ্যে গোবর পোচে উত্তম মানের সার তৈরি হয়। পরবর্তীতে এটি জমিতে ব্যবহার করার উপযোগী হয়। জৈব সার ব্যবহার করার ফলে রাসায়নিক সারের উপর নির্ভরশীল কম হয়।এজন্য আমাদের জৈব সার ব্যবহার করাই ভালো। জৈব সার ব্যবহার করলে ফসল খুব ভালো হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url