লেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা



লেবু একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ফল।গ্রাম বাংলার যে কোন জায়গায় দেখা যায় এই লেবু গাছ।লেবু হল ছোট আকারের একটি ফল যা আমেরিকা, ভারত, অস্ট্রেলিয়া,পাকিস্তান,চীন এবং বাংলাদেশে চাষ করা হয়। গ্রাম বাংলার মানুষেরা ভাতের সাথেএক টুকরো লেবু খেয়ে থাকেন। সাধ গন্ধে ভরপুর লেবুতে।লেবু একটি পুষ্টিকর ফল যা বিভিন্ন স্বাস্থ্যের জন্য উপকার। লেবুতে ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক এসিড সমৃদ্ধ যার হৃদরোগ ,ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে পারে ও হাড়ের গঠনের সাহায্য করে।

লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা
গরমের দিনে একগ্লাস ঠান্ডা জলের সঙ্গে লেবু ও নুন মিশিয়ে খেলে আমাদের শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। শরীর থেকে ক্লান্তি ভাব দূর হয় এবং শরীর সতেজ হয়ে ওঠে।রান্নার সময় সবজি তে লেবুর রস দিলে সেই সবজির স্বাদ দ্বিগুণ বেড়ে যায়।লেবুতে সাইট্রিক অ্যাসিড থাকায় এটির স্বাদ টক হয়। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।

ভূমিকাঃ

আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে লেবুর উপকারিতা সম্পর্কে জানব। লেবু আপনার স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে পারে এবং কিডনির পাথর এবং রক্তশূন্যতা থেকে রক্ষা করে। লেবুতে ভিটামিন সি ,ফাইবার এবংবিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে। হার্টের স্বাস্থ্য ,ওজন নিয়ন্ত্রণ ও হজমে সাহায্য করে।

লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতাঃ

নানা পুষ্টি গুনে ভরপুর লেবু।লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-

ওজন নিয়ন্ত্রণে লেবুর উপকারিতাঃ

লেবু আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য আমাদের প্রতিনিয়ত লেবু খেতে হবে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস গরম জলে একটি লেবু এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নিতে হবে। এটি নিয়মিত খেলে আপনার শরীরের ওজন কমতে থাকবে এবং কোলেস্টোলের কমাতে সাহায্য করবে। লেবুতে পেকটিন নামক যৌগ থাকে। এটি একপ্রকার ফাইবার যা হজমে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে লেবুর উপকারিতাঃ

লেবুর রস আমাদের শরীরে ক্যান্সারের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত লেবু খেলে এই খারাপ কোষ গুলো নষ্ট হয়ে যায়। তাহলে আমরা লেবু খেলে ভালো থাকবো।

হজম ক্ষমতা বাড়াতে লেবুর উপকারিতাঃ

লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এতে ফাইবার রয়েছে যা নিয়মিত মলত্যাগের সাহায্য করে এবং হজম শক্তি উন্নত করে। লেবুতে থাকা পেকটিন নামক ফাইবার খাদ্যের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

কিডনির পাথর পড়া রোদে লেবুর উপকারিতাঃ

বজ্র্য পদার্থ থেকে কিডনিতে ছোট ছোট পাথর তৈরি হয়। সাইট্রিক এসিড কিডনির পাথর গলাতে সাহায্য করে ।এ জন্য প্রতিদিন লেবু খাওয়া প্রয়োজন।কয়েক ফোঁটা লেবুর রস কিডনির পাথর গঠন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

ত্বকের উজ্জ্বলতায় লেবুর উপকারিতাঃ

লেবুর রসে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা ত্বকের কালচে দাগ সোপ দূর করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। লেবু ত্বক পরিষ্কার করতে ও মুখের দাগ কমাতে সাহায্য করে। বাড়িতে কোন ফেসপ্যাক বা স্কাব তৈরি করলে সেখানে মিশিয়ে নিবেন লেবুর রস। লেবু আপনার ত্বকে বয়স জনিত বালিরেখা দূর করতে সাহায্য করে।

চুল পড়ার হাত থেকে রক্ষা করেঃ

লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা কোলেজেনকে বাড়িয়ে তোলে এবং চুলের ফলিক গুলোকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন তাহলে এলোভেরা জেল এর সাথে ২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ৩০ মিনিট রাখার পর সেটি শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার চুলের গোড়া মজবুত হবে ও চুল পড়া বন্ধ হবে।

দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে যায়:

অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ফলে দাঁত ক্ষয় হয়ে যায়। দাঁতের উপর সাদা স্তর পড়ে যায়। কারণ লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক এসিড যা দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে দেয়।সফট ড্রিঙ্ক খেলে দাঁতের যে সমস্যা হয়, লেবু থেকেও ঠিক একই সমস্যা হয়।যারা প্রতিদিন সকালে লেবু পানি খান, তাদের অত্যন্ত দুইবার ব্রাশ করতে হবে তাহলে দাঁতের সমস্যা হবে না।

পেট খারাপঃ

লেবুর রস পান করলে খাবার হজম হয়ে যায়। লেবুতে থাকা এসিড হজমে সহায়তা করে।কিন্তু অতিরিক্ত এসিডের কারণে পেটের সমস্যা দেখা দেয়।এজন্য খাবারের সাথে মিশিয়ে লেবু খাওয়া উচিত।

সকালে খালি পেটে লেবু খাওয়ার উপকারিতা ঃ

সকালে এক গ্লাস লেবু পানি খেলে হজম শক্তি বাড়ে। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়। ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ হয় ।লেবু পানি খেলে ত্বক উজ্জ্বল ও টানটান রাখতে সাহায্য করে।

প্রতিদিন কয়টা লেবু খাওয়া নিরাপদ?

দিতিদিন এক থেকে দুইটি লেবু খাওয়া ভালো।অন্য সব খাবারের মতো এই ফল পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত লেবু খেলে উচ্চমাত্রায় সাইট্রিক এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। লেবুতে টাইরা মিনও থাকে, যা মাইগ্রেনের রোগীর ক্ষেত্রে মাথা ব্যাথার কারণ হতে পারে।

লেবুর খোসা খেলে সারবে যেসব রোগ:

  • লেবুর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেক কিছু মানুষ জানে না।লেবুর রস ও খোসা স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। লেবুর খোসা খেলে বিভিন্ন রোগ ভালো হয়। লেবুর খোসা কিভাবে খাওয়া যায় আসুন সেটি জেনে নিই।
  • লেবুর খোসায় ভিটামিন সি ও সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে, যা মাড়ি থেকে রক্ত পড়া একাধিক রোগ প্রতিরোধ করে।
  • লেবুর খোসায় সাইট্রাস বায়ো ফ্লেভোনয়েড থাকে, যা ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে লেবুর খোসা খুব ভালো কাজ করে। লেবুর খোসায় এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বক থেকে টক্সিক বের করে দেয়।
  • নিয়মিত লেবুর খোসা খেলে সাইট্রিক এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

লেবুর অপকারিতাঃ

লেবু সরাসরি খাওয়া উচিত নয়। খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। হালকা গরম জলের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। সরাসরি লেবু খাওয়ার ফলে লেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড দাঁতের সংস্পর্শে এসে আপনার দাঁতের এনামেল নষ্ট করে দিবে। যার ফলে আপনার দাঁত ক্ষয় হতে শুরু করবে।

যাদের গ্যাসের সমস্যা আছে তাদের লেবু না খাওয়াই ভালো। কারণ লেবু খেলে আরো সমস্যা বেড়ে যাবে। তাই তাদের লেবু না খাওয়াই ভালো।

বেশি পরিমাণে লেবু জল পান করা যাবে না। প্রতিদিন অল্প পরিমানে লেবু জল খেতে হবে।

লেখকের মন্তব্যঃ

লেবু আমাদের সবার অনেক পছন্দের।লেবু দিয়ে আমরা আমাদের শরীরের যত্ন করার পাশাপাশি নানা কাজে ব্যবহার করে থাকি। এটি যেমন আমাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং শরীরের বিভিন্ন কাজও করে। তাই লেবু খাওয়ার আগে ভালোভাবে জেনে নিন আমাদের কয়টি করে লেবু খেতে হবে। নিয়মিত লেবু খেলে আমরা সকলেই উপকৃত হব।আমার আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আমার পেজটি ভিজিট করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url