ত্বকের যত্নে চন্দন কাঠের উপকারিতা গুরুত্বপূর্ণ
বহু বছর ধরে ত্বকের পরিচর্চায় চন্দন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য চন্দন একটি উপকারী উদ্ভিদ। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় চন্দন ব্যবহৃত হয়।চন্দন ঔষধি গুণে ভরপুর। চন্দন দুই প্রকার যথা শ্বেত চন্দন ও রক্ত চন্দন। রাস্তার ধারে বা আবাস ভূমির পাশে চন্দন গাছ জন্মায়। চন্দন কাঠের দাম প্রচুর। চন্দন গাছ চাষ করলে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। এক একর জমিতে চন্দন গাছ চাষ করে ৩০ থেকে ৩২ কোটি টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা যায়।
এই গাছ চাষ করলে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা লাভ হয়। এই লাভজনক চাষ সম্পর্কে অনেক মানুষই জানে না। উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ ও উড়িষ্যাতেও শ্বেত চন্দন দেখা যায়। এছাড়া শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া,ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামে পাওয়া যায়।বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়।
ভূমিকাঃ
রূপচর্চার জন্য চন্দনের খ্যাতি অনেক যুগ থেকে চলে আসছে। আগেকার দিনে রূপচর্চার একটি অন্যতম উপাদান ছিল চন্দন। কিন্তু এখন বিভিন্ন রকমের কসমেটিক্স এসে চন্দনের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে।চন্দন ব্যবহার করলে বিভিন্ন রকম সমস্যার সমাধান হয়। এতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ব্রণ ও ত্বকের নানা রকম সমস্যার সমাধান করে। এছাড়া মুখের বালি রেখা দূর করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, রোদে পোড়া দাগ দূর করে।
রূপচর্চায় চন্দনের উপকারিতাঃ
বালি রেখা দূর করেঃ
চন্দনে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা আপনার মুখের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। যা বালি রেখা দূর করতে সাহায্য করে। চন্দন একটি চমৎকার অ্যান্টি এজেন্ট উৎস হিসেবে পরিচত।
রোদে পোড়া দাগ দূর করেঃ
বাহিরে যাওয়ার ফলে আমাদের ত্বক রোদে পুড়ে যায়। এ রোদে পোড়া ভাব দূর করার জন্য চন্দন ব্যবহার করে থাকি।শসার রস, চন্দনের গুঁড়ো,গোলাপজল ও দই এক সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন। ১০ থেকে ২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্যবহার করার ফলে আপনার মুখের রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে যাবে। রোদের পড়ার কারণে ত্বক জ্বালা করে সেটাও কমে যাবে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়ঃ
ত্বকের উজ্জ্বলতার জন্য চন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মসৃণ ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য হলুদ ও চন্দনের গুড়া একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। বিশ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
ডার্ক সার্কেল দূর করেঃ
চন্দন ব্যবহারের ফলে আপনার ডার্ক সার্কেল দূর হয়ে যাবে।চন্দনের গুড়ার সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে চোখের চারপাশে লাগিয়ে রাখুন।এরপর সারারাত রেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন। এক সপ্তাহের মধ্যে আপনার ডার্ক সার্কেল দূর হয়ে যাবে।
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাঃ
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় চন্দন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে এক চামচ সাদা চন্দন কাঠের পেস্ট নিয়ে, আধা কাপ দুধের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এটি সকালে খালি পেটে খেতে হবে। এরপর আট দশটা তুলসী পাতা চিবিয়ে খাবেন।কিছু সময়ের মধ্যে রক্তচাপ কমে আসবে।ব্রংকাইটিস রোগের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করলে আপনি উপকার পাবেন।
মুখের দাগ দূর করেঃ
১/২ চা চামচ চন্দন গুড়া,১/২ চা চামচ টমেটোর রস,১/২ চা চামচ মুলতানি মাটি ও সামান্য পরিমাণে গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট।শুকিয়ে যাওয়ার পর বরফ পানিতে তুলা ভিজিয়ে মুখ গলা পরিষ্কার করুন। মুখে অতিরিক্ত তেল ও ময়লা পরিষ্কার করতে এই প্যাক খুবই কার্যকারী।এভাবে প্রতিদিন মুখে লাগিয়ে রাখলে মুখের দাগ দূর হয়ে যাবে ও ত্বক উজ্জ্বল হবে।
চন্দন কাঠের উপকারিতা
- ত্বকের পরিচর্যায় চন্দন ব্যবহার হয়ে আসছে অনেক আগে থেকে।
- ব্রণ, দাগছোপ কমাতে চন্দন দারুণ উপকারী।
- নিয়মিত চন্দনের ফেসপ্যাক লাগালে ফেসিয়াল করার প্রয়োজন হবে না।
- ব্রণের সমস্যায় চন্দন মুখে সরাসরি লাগাতে পারেন।
- তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যার চন্দন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- অতিরিক্ত চিন্তা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব দূর করতে চন্দন কাঠ উপকারী।
- ত্বকের এলার্জি দূর করতে চন্দন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- চন্দনে এন্টি পাইরেটিক রয়েছে যা জ্বর কমানোর কাজে ভূমিকা পালন করে।
- চন্দনের তেল দিয়ে অ্যারোমা থেরাপি নেওয়া যেতে পারে।
- গায়ের দুর্গন্ধ দূর করতে চন্দনের পেস্ট বা চন্দনের তেল পানিতে মিশিয়ে গোসল করা যেতে পারে।
- বাজারে চন্দনের সাবানও পাওয়া যায়। সেটিও আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
শেষ কথাঃ
ত্বকের যত্নে চন্দন কাঠের গুরুত্ব খুবই। আজকের এই পোস্টে চন্দন কাঠের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আর এর জন্য সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।এতক্ষণ আমার সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম পোস্ট আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url